লাই লাতুল শবে কদর কবে। এ রাত চেনার কোনো আলামত আছে কি? নির্দিষ্ট করে লাই লাতুল কদর চেনার উপায় কি । কারণ এ রাতে কোন নিদিষ্ট চিহ্ন নেই যে শবে কদর কখন হবে। আমাদের দেশে ২৭ রমজানে শবে কদর পালন করা হয়। এই ধারণা যদিও অতিথ থেকে পালন করে আসছে । পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকের যে কোনো একটি বেজোড় রাতেই শবে কদর হতে পারে
পবিএ শবে কদর বা লাইলাতুল কদর অর্থ মর্যাদা পূর্ণ রাত। লাইলাতুল কদরের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো- এই রাতে হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উপর পবিত্র কোরআন নাজিল হয়।
রমজানে আল্লাহ তায়ালা হযরত মুহাম্মদ সাঃ যে রাত দান করেছেন যা এর আগে কোন নবী ও উম্মতের উপর দান করে নিই।
- হযরত মুহাম্মদ সাঃ নবী করীম (সা.) এরশাদ করেছেন:আমাকে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়েছে,অতঃপর আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতএব তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতসমুহে তা খোঁজ করবে।
- (বুখারী ৭০৯)
- হযরত মুহাম্মদ সাঃ আরও বলেছেন:রমজানের শেষ দশ দিনে তোমরা কদরের রাত তালাশ কর।(মুসলিম শরীফ ১১৬৯)
- রাসুল (সা.) বলেছেন:যে ব্যক্তি পবিএ শবে কদর থেকে বঞ্চিত হলো; সে যেন সমগ্র কল্যাণ থেকে পরিপূর্ণ বঞ্চিত হলো।’
পবিএ শবে কদর বা লাইলাতুল কদর অর্থ মর্যাদা পূর্ণ রাত। লাইলাতুল কদরের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো- এই রাতে হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উপর পবিত্র কোরআন নাজিল হয়।
কোরআনের ভাষায় এই মাসের হাজার মাসের চেয়েও অধিক উত্তম ও শ্রেষ্ঠ। হাদিসের মতে কেউ যদি এই রাতে চোখের পানি ছেড়ে আল্লাহ রব্বুল আলামীনের কাছে ক্ষমা চায় তাহলে আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাকে ক্ষমা করবেন। এই রাত ইমানদার ও ইবাদতকারীদের ক্ষমা করা হয়।
এই সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা
- পবিত্র কোরআনে বলেন : নিশ্চয়ই আমি নাযিল করেছি এ কুরআন মহিমান্বিত রাএিতে। আর আপনি কি জানেন মহিমান্বিত রাত্রি কী,, মহিমান্বিত রাত্রি হাজার মাসের চেয়েও অধিক শ্রেষ্ঠ। এই রাতে প্রত্যেক কাজের জন্য ফেরেশতাগণ এবং রূহ তাদের প্রতিপালকের আদেশত্রুমে অবতীর্ণ হয়। সেই রাত্রি শান্তিই শান্তি, ফজর হওয়া পর্যন্ত। (আল-কদর - ১-৫)
পবিত্র কোরআন ও হাদিসের মতে বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ মাস হলো পবিত্র রমজান মাস। আর রমজানে সর্বশ্রেষ্ঠ টাত হলো লাই লাতুল কদর । কেননা এই মাসে মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন মুসলমানের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন মাজিদ নাজিল করেন।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি রমাযানে ইমানের সাথে ও সওয়াব লাভের আশায় সওম পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়।
এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে, সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
- রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকির আশায় কদরের রাতে ইবাদতের মধ্যে রাত্রি জাগবে, তার পূর্বের গুনাহ্ (সগিরা) ক্ষমা করে দেয়া হবে। (সহিহ বুখারি)
- এতে কোন সন্দেহ নেই এই রাত রহমত পূর্ণ ও রকমত ময় রাত। তাই প্রতিটি মুসলিমের জন্য অবশ্যই এই রাতে বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগী হওয়া।
হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
- রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন, আয়েশা, যদি আমি লাইলাতুল কদর যদি কদরের রাত পাও তাহলে এই দোয়া পড় "اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي অর্থাৎ: হে আল্লাহ, আপনি সম্মানিত ক্ষমাকারী, আপনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।( ইবনু মাজাহ জামে তিরমিজি)
আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে রমাজানের মধ্যম দশকে ইতিকাফ করি। তিনি বিশ তারিখের সকালে বের হয়ে আমাদেরকে সম্বোধন করে বললেনঃ আমাকে লাইলাতুল ক্বদর (-এর সঠিক তারিখ) দেখানো হয়েছিল পরে আমাকে তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতে তার সন্ধান কর। আমি দেখতে পেয়েছি যে, আমি (ঐ রাতে) কাদা-পানিতে সিজদা করছি।
হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত তিন বলেছেন :
- যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাঃ বলেন: রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত গুলোতে তোমরা লাই লাতুল কদর তালাশ কর।[[সহীহ বুখারী (২০১৭) ও সহীহমুসলিম (১১৬৯), বুখারী]
ইমাম বুখারী এই হাদিসটির শিরোনাম লিখেছেন রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত লাইলাতুল ক্দর অনুসন্ধান করা। মুসলমানদের জন্য এই রাতটি গোপন রাখার পেছনে কারণ হলো রমজানের শেষ দশকের সবগুলো রাতে আল্লাহ রব্বুল আলামীন ইবাদত বন্দেগী জিকির কিংবা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ।
আমাদের দেশে সাধারণত প্রচলিত আছে সাতাশ রমজানে শবে কদর পালন করা হয় যদিও এটি পুরোপুরি সঠিক নয়, কেননা ২৭ রমজানে শবে কদর হবে এটার কোন সঠিক প্রমাণ নেই, তবে কিছু হাদিস থেকে এটা যানা সম্ভব রমজানে শেষ দশকের বিজোড় রাতে শবে কদর হয়ে থাকে। তাই আমরা চেষ্টা করব শবে কদরের রাতে বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগী হওয়ার জন্য।
0 মন্তব্যসমূহ